ভগবান বুদ্ধের প্রকারভেদ

  

ভগবান বুদ্ধের প্রকারভেদ

পবিত্র ত্রিপিটক শাস্ত্রের বর্ণনামতে বুদ্ধ তিন প্রকার। যথা :

১. সম্মাসম্মুদ্ধ বা সম্যকসম্বুদ্ধ।

২. পচ্চেক বুদ্ধ বা প্রত্যেকবুদ্ধ।

৩. সাবকবুদ্ধ বা শ্রাবকবুদ্ধ।

 সম্যক সম্বুদ্ধ :

যিনি কোনো গুরুর সাহায্য ছাড়া স্বীয় আদর্শ ও কর্মের দ্বারা নিরলস প্রচেষ্টায় বুদ্ধত্ব লাভ করেন, তাঁকে সম্যক সম্বুদ্ধ বলে । তিনি সর্বোত্তম জ্ঞানের অধিকারী। সম্যক সম্বুদ্ধ সকল জীবের কল্যাণে তাঁর দুঃখমুক্তির পথ ও নির্বাণলাভের উপায় প্রচার করেন।

প্রত্যেক বুদ্ধ

সম্যক সম্বুদ্ধের অনুপস্থিতিতে যিনি নিজের প্রচেষ্টায় চতুরার্য সত্য জ্ঞাত হয়ে তৃষ্ণা ক্ষয় করে আর্হত্ব ফল লাভ করে, তাঁকে পচ্চেক বুদ্ধ বা প্রত্যেক বুদ্ধ বলে। । তাঁরা সম্যক সম্বুদ্ধের দেশিত সাধনপ্রণালী অনুশীলন করে সর্বতৃষ্ণা ক্ষয় করেন। প্রত্যেকবুদ্ধগণের সাধনালব্ধ জ্ঞান কেবল নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। অৰ্হত্ব ফললাভী এবং নির্বাণগামী এরূপ অসংখ্য প্রত্যেকবুদ্ধ পৃথিবীতে উৎপন্ন হয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও হবেন। এজন্য জগৎ অহৎ বুদ্ধশূন্য নয়।

শ্রাবকবুদ্ধ

শ্রাবকবুদ্ধ হলো সম্যকসম্বুদ্ধের অনুশাসন অনুশীলনে পারঙ্গম পুণ্যপুরুষ।একজন সম্যসম্বুদ্ধের অনেক শিষ্য থাকেন।এই শিষ্যদেরও অনেক শিষ্য থাকেন।এসব শিষ্য ও প্রশিষ্যগণ সম্যকসম্বুদ্ধের নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে মুক্তিসাধনায় রত থাকেন।এঁদের মধ্যে অনেকে অর্হত্ব ফল লাভ করেন। তাঁরা আর জন্মগ্রহণ করে দুঃখ ভোগ করবেন না।তাঁরা নির্বাণগামী।এরূপ বিমুক্ত পুরুষকে বলা হয় শ্রাবকবুদ্ধ।

বুদ্ধের অনেক শিষ্য শ্রাবক বুদ্ধ ছিলেন।তাঁদের মধ্যে অগ্রশাবক সারিপুত্র ও মৌদগল্যায়ন, মহাকশ্যপ, বিনয়ধর উপালি, ধর্মভাণ্ডারিক আনন্দ, লাভীশ্রেষ্ঠ সীবলী প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া বুদ্ধের সময় অনেক শ্রাবক বুদ্ধ ছিলেন। তাঁরা জীবজগতের কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত রাখেন এবং অন্যদের নির্বাণলাভে সহায়তা করেন। 

No comments:

Post a Comment