কেন আমাদের ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হলো?' | Khagrachhari News | Guimara

 https://www.youtube.com/watch?v=SXXJ4KvUc7o



 


গুইমারাই সেনাবাহিনী গুলিতে পাহাড়ি নারী ও পুরুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছে.....ফিলিস্তিনির পক্ষে হাজার হাজার অমুসলিম দাড়িয়ে গেছে। আজ পর্যন্ত কোন মুসলিম এভাবে অন্য ধর্মালম্বীদের পাশে দাড়িয়েছে এরকম কোন নজির নেই। "বৃক্ষ তোর নাম কি? ফলে পরিচয়।"

 Taslima Nasrin

খাগড়াছড়ির আদিবাসী মেয়েটিকে ডিঙিয়ে তুমি ছুটে যাচ্ছো
গণধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে ডিঙিয়ে তুমি ছুটে যাচ্ছো,
মিলিটারির গুলিতে অসংখ্য আহত আদিবাসীকে ডিঙিয়ে
তুমি ছুটে যাচ্ছো, আগুনে পুড়ছে বাড়িঘর, তুমি ছুটে যাচ্ছো।
আততায়ীর দলে আতঙ্কে নাম লেখাচ্ছে সংখ্যালঘু,
সামান্য ভিটেমাটি আঁকড়ে স্বধর্মে বেঁচে থাকার আকুতি নিয়ে
আততায়ীর কাছেই ভিক্ষে চাইছে প্রাণ,
তুমি দেখেও থামছো না, বরং ছুটছো।
সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসের শিকার হয়ে ঘরে বাইরে আজ
মানুষের খুলি উড়ে গেছে,
মুখ থেতলে গেছে, বুক রক্তাক্ত।
মুক্তচিন্তকদের মুণ্ডু পড়ে আছে রাস্তায়,
রক্তে ভাসছে মস্তিস্কের টুকরো,
সেই রক্তে জুতো ভিজে গেছে তোমার, তুমি ছুটছো,
অসংখ্য লাশকে পায়ে মাড়িয়ে তুমি ছুটে যাচ্ছো।
জিহাদিদের নারকীয় উল্লাসের ভেতর দিয়ে তুমি ছুটছো।
ভয়ে সিঁটিয়ে আছে মানুষ, তোমার স্বজন, তোমার প্রতিবেশি,
যে কোনও সময় যে কেউ পিটিয়ে মেরে ফেলতে পারে যে কাউকে ।
যে কোনও সময় যে কেউ ধর্ষণের আর সন্ত্রাসের শিকার হতে পারে।
তুমি জানো কিন্তু ফিরে তাকাচ্ছো না কারও দিকে, তোমার সময় নেই,
তুমি ছুটছো।
তোমার দেশ তলিয়ে যাচ্ছে গভীর অন্ধকারে,
হাহাকার ছাড়া কোথাও কোনও শব্দ নেই,
অথচ সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার দূরে তুমি যাবে,
তুমি ভিনদেশে যাবে, গাজায়,
যেখানে শিশুরা কাঁদছে, নারী পুরুষ কাঁদছে,
তুমি তাদের চোখের জল মুছিয়ে দিতে যাচ্ছো।
তোমার চোখ থেকে অবিরল ঝরে পড়ছে জল,
তোমার হৃদয় কাঁদছে তাদের জন্য,
কাঁদছে, যদিও তাদের ভাষা তুমি জানো না,
যদিও তাদের সংস্কৃতি তুমি জানো না,
যদিও তাদের ইতিহাস তুমি সবটা জানো না,
যদিও তাদের বেদনা তুমি সম্পূর্ণ অনুভব করতে পারো না,
তারপরও তুমি কাঁদছো, তুমি তাদের কাছে ছুটছো
কারণ তারা তোমার ধর্মের লোক, তারা মুসলমান।


সাতক্ষীরার কলাপোতা গ্রামে পূজা মন্ডপের প্রতিমা ভাংচুর ও শাড়ী ছিঁড়ে ফেলেছে জিহাদিরা



Durga Puja and Torture on Hindu community

 নীলফামারীতে  প্রতিমা ভেঙ্গে চলে যাওয়ার সময় একজন হাতেনাতে ধরা পড়েছে।পুলিশের হাতে ওরে দেওয়ার পর পুলিশ আবার ছেড়ে দিয়েছে।

সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে সাবধানে থাকবেন।


আজ কক্সবাজারের রামু ট্রাজেডির ১৩ বছর। Today is a Black Day for Bangladeshi Buddhists

Today is a Black Day for Buddhists
Today marks 13 years since the Ramu tragedy in Cox’s Bazar.

On 29 September 2012, a horrific violent attack took place in Ramu, Cox’s Bazar, against the Buddhist community — one of the darkest chapters in Bangladesh’s history.

That night, based on a false rumor surrounding a Facebook post, more than 12 ancient Buddhist monasteries, hundreds of Buddhist homes, manuscripts, and religious artifacts in Ramu and surrounding areas were burned down.

Even after 13 years, no exemplary justice has been delivered for this incident. This culture of impunity is not only an insult to the victims but also a shame for the entire nation.

The questions remain:

  • Who was behind such a large-scale attack?

  • Why has justice not been served even today?

  • Who is protecting the perpetrators?

আজ বৌদ্ধদের কালো দিন

আজ কক্সবাজারের রামু ট্রাজেডির ১৩ বছর।

২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের রামুতে ঘটে যায় বাংলাদেশের ইতিহাসে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর এক ভয়াবহ সহিংস হামলা।

২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে মিথ্যা গুজবের ভিত্তিতে সেদিন  রাতে রামু ও আশেপাশের এলাকায় অন্তত ১২টির বেশি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার, শতাধিক বৌদ্ধ ঘরবাড়ি, পাণ্ডুলিপি এবং ধর্মীয় নিদর্শন পুড়িয়ে দেওয়া হয়। 

১৩ বছর পার হয়ে গেলেও ঘটনার দায়ে এখনো কারো দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়নি।বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি শুধু ভুক্তভোগীদেরই নয়, পুরো জাতির জন্য লজ্জাজনক।

প্রশ্ন থেকে যায়:

- এত বড় হামলার পেছনে কারা ছিল?  

- কেন আজও বিচার হয়নি?  

- দায়ীদের রক্ষা করছে কে? 



সদ্ধর্ম রত্নচৈত্য - শ্রীমৎ জিনবংশ মহাস্থবির, Saddhama Ratna Chaitya Book PDF by Sreemot Jinabongsha Mohastabeer

 ই-বুকের নাম- সদ্ধর্ম রত্নচৈত্য- Full PDF book






যোগেন্দ্রনাথের পদত্যাগপত্র এবং রাজনৈতিক এবং ধর্মীয়ভাবে অদূরদর্শিতা

বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক অসচেতনতার একটি বড় দৃষ্টান্ত বরিশালের যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল। তিনি হিন্দু হয়েও মুসলিমলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি পাকিস্তান সরকারের আইন ও শ্রম বিষয়ের মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৫০ সালে পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক আক্রমণকৃত অঞ্চল পরিদর্শন করে তিনি বুঝতে পারেন হিন্দু সম্প্রদায়ের হয়েও মুসলিমলীগকে সমর্থন করা তার উচিত হয়নি। অতীতের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তার মধ্যে ব্যাপক অনুশোচনা আসে। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত বন্দর নগরী ও পাকিস্তানের সাবেক রাজধানী করাচীতে বসবাস করতেন। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে যাওয়ার পথে কোলকাতা বিমানবন্দরে অবতারণ করেন। সেখান থেকেই পরবর্তীতে তিনি ১৯৫০ সালের ৮ আগস্ট একটি দীর্ঘ পদত্যাগপত্র পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের বরাবরে প্রদান করেন। সম্পূর্ণ পদত্যাগপত্রটি জুড়ে প্রকাশ পেয়েছে অন্যের শক্তিতে শক্তিমান হতে চাওয়া ভ্রান্ত এক রাজনীতিবিদের প্রচণ্ড হতাশার কথা। পদত্যাগপত্রটি বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক দলিল হয়ে আছে।পদত্যাগপত্রে যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন:
"প্রিয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়,
পূর্ব বাংলার অনগ্রসর হিন্দু জনগণের উন্নতি সাধন আমার জীবন সাধনা। উদ্দেশ্য সাধনের ব্যর্থতায় আমি চরম হতাশাগ্রস্ত। তাই গভীর ভারাক্রান্ত হহৃদয়ে আপনার মন্ত্রী পরিষদ থেকে পদত্যাগ করছি। ভারত-পাক উপমহাদেশের ইতিহাসের এই সন্ধিক্ষণে যে সকল কারণ আমাকে পদত্যাগে প্রণোদিত করেছে– তার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া সঙ্গত বলে আমি মনে করি।

...অনুতাপ-অনুশোচনার সঙ্গে সেই দিনগুলির কথা স্মরণে আসে যখন এই উপমহাদেশের ৩২ কোটি হিন্দু আমার বিরুদ্ধে ছিল এবং আমাকে চিহ্নিত করেছিল হিন্দু ও হিন্দুধর্মের শত্রুরূপে। ...ঢাকায় নয়দিন অবস্থান কালে আমি ঢাকা ও তার সন্নিহিত দাঙ্গা-বিধ্বস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করি।... ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা চট্টাগ্রাম রেলপথে শত-শত হিন্দু-হত্যায় আমি মর্মাহত। বরিশালে পৌঁছে দাঙ্গার যে চিত্র আমি পেয়েছি তা আমাকে স্তম্ভিত করেছে। আমি বুঝতে পারি না যে জেলা সদর থেকে মাত্র ৬ মাইল দূরে কাশীপুর, মাধবপাশা ও লাকুটিয়ায় এরকম ভয়াবহ দাঙ্গা কিভাবে হতে পারে। মাধবপাশা জমিদার বাড়িতেই ২০০ হিন্দুকে হত্যা করা হয়। আহতের সংখ্যা ৪০। মুলাদিতে দেখেছি নরকের বীভৎসতা। মুলাদি বন্দরেই (পাট-গুদামে) হত্যা করা হয় ৩০০ হিন্দুকে।... পুরুষদের নির্বিচারে হত্যা করে হিন্দু যুবতীদের লুণ্ঠিত দ্রব্যের ন্যায় উপঢৌকন দেওয়া হয় হত্যা কাণ্ডের নায়কদের।

...মার্চের শেষদিকে শুরু হয় হিন্দুদের দেশান্তর-যাত্রা, ব্যাপকভাবে। মনে হল যেন অনতিবিলম্বেই সকল হিন্দু পূর্ব পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে চলে যাবে। ভারতে সৃষ্টি হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া—ওঠে রণ-হুংকার। পরিস্থিতি খুবই সঙ্কটজনক। একটা জাতীয় বিপর্যয় যেন অবশ্যম্ভাবী। অনিবার্য দুর্যোগ এড়াতে স্বাক্ষরিত হল দিল্লিচুক্তি।

দিল্লিচুক্তির ৬ মাস পরেও পাকিস্তানে ও বিদেশে হিন্দু-বিদ্বেষী ও ভারতে বিরোধী প্রচার অব্যাহত। সমগ্র পাকিস্তানে “কাশ্মীর দিবস" পালন সেই সাক্ষ্যই বহন করে। ভারতে বসবাসকারী মুসলমানের নিরাপত্তার জন্য পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর প্রয়োজন—পাঞ্জাবের (পাক) রাজ্যপালের এই সাম্প্রতিক বিবৃতিতে ভারতের প্রতি পাকিস্তানের প্রকৃত উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট।

পূর্ববাংলার অবস্থা আজ কিরূপ? ইতিমধ্যেই ৫০ লক্ষ হিন্দু দেশত্যাগ করেছে। ....স্বদেশে হিন্দুরা আজ “রাষ্ট্রহীন”—প্রবাসী। তাদের একমাত্র অপরাধ—ধর্মে তারা হিন্দু। আমার সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত, পাকিস্তানে হিন্দুদের কোন স্থান নেই। তাঁদের ভবিষ্যৎ গাঢ় তমসায় আচ্ছন্ন—হয় ধর্মান্তর অথবা অস্তিত্ব লোপ।

...পাকিস্তানের সামগ্রিক অবস্থা–হিন্দুদের প্রতি চরম নৃশংসতার কথা বাদ দিলেও আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও কম বিষাদ-তিক্ত ও ইঙ্গিতবহ নয়। সংসদীয় দলের নেতা ও প্রধান মন্ত্রী রূপে আপনি গত ৮-ই সেপ্টেম্বর আমাকে এক বিবৃতি দিতে বাধ্য করেছিলেন। আপনি জানেন অসত্য এবং তার চেয়েও ঘৃণ্য অর্ধসত্যের উপর ভিত্তি করে কোন বিবৃতি দানে আমি সম্মত ছিলাম না।...এই ভণ্ডামী ও অসত্যের গুরুভার অসহনীয়। বিবেকের দংশনে আমি জর্জরিত । তাই মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আপনার হাতে তা অর্পণ করছি। আশা করি, বিলম্ব না করে আপনি তা গ্রহণ করবেন। আপনি অবশ্য এই শুন্যপদ এমন ভাবে পুরণ করবেন যা আপনার ইসলামিক রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সাধনে হবে সহায়ক ও সঙ্গতিপূর্ণ।"
( নিত্যরঞ্জন দাস ২০১০ : ৩৭২-৩৭৪)

তথ্য সহায়তা:
১. নিত্যরঞ্জন দাস, 'মুসলিম শাসন ও ভারতবর্ষ', তুহিনা প্রকাশনী, কলকাতা: এপ্রিল ২০১০

ড. শ্রীকুশল বরণ চক্রবর্ত্তী 
সহকারী অধ্যাপক, 
সংস্কৃত বিভাগ, 
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

Daily Buddhist Prayer in Bangla – 10 Minute

Daily Prayer – 10 Minute 

নমো তসস ভগবতো অরহতো সম্মাসম্বুদ্ধসস (৩ বার)

ত্রিশরণ- বুদ্ধং সরণং গচ্ছামি ধম্মং সরণং গচ্ছামি সঙ্ঘং সরণং গচ্ছামি(৩ বার)

দশ সুচরিতশীল - ১. পানাতি পাতা,, ২. আদিন্নদানা,,, ৩. কামেসু মিচ্ছাচারা,,, ৪. মুসাবাদা,,, ৫. সুরা মেরেয় মজ্জ পমাদট্ঠানা,,,৬। পিসুন বাচা ও ফরুসবাচা বেরমণী,,,৭। সম্ফপ্পলাপা বেরমণী,,, ৮। অভিজ্ঝা বেরমণী,,, ৯। ব্যাপাদ বেরমণী সিক্খাপদং সমাদিয়ামি। ১০। মিচ্ছাদিটিঠিয়া বেরমণী সিক্খাপদং সমাদিয়ামি।  

বুদ্ধের নয় গুণ বন্দনা - ইতিপিসো ভগবা, অরহং সম্মাসম্বুদ্ধো, বিজ্জাচরন সম্পন্নো, সুগত, লোকবিদু , অনুত্তরো পুরিস-দম্মা সারথি, সত্থা-দেব-মনুস্সানং বুদ্ধ ভগবা'তি।

ধম্মের ছয় গুণ বন্দনা-স্বাক্খাতো ভগবতো ধম্মো, সন্দিট্এিকা, অকালিকো, এহিপসসিকো, ওপনায়িকো পচ্চতং, বেদিতব্বো বিঞ্ঞূহীতি।
সঙ্ঘের নয় গুণ বন্দনা- সুপটিপন্নো ভগবতো সাবকসঙ্ঘো, উজুপটিপন্নো ভগবতো সাবকসঙ্ঘো, ঞায়পটিপন্নো ভগবতো সাবকসঙ্ঘো, সমীচিপটিপন্নো ভগবতো সাবকসঙ্ঘো, যদিদং চত্তারি পুরিসয়ুগানি, অট্ঠ পুরিসপুগলা, এস ভগবতো সাবকসঙ্ঘো, আহুণেয্যো, পাহুণেয্যো, আহুণেয্যো,দকিখণেয্যো, অঞ্জলি করণীয্যো, অনুত্তরং পুঞ্ঞক্খেত্তং লোকস্সা
তি।

সকল চৈত্য বন্দনা - বন্দামি চেতিযং সব্বং, সব্বট্ঠানেসু পতিট্ঠিতং। সারীরিক ধাতুং মহাবোধিং বুদ্ধরুপং সকলং সদাতি।

বোধি বন্দনা- যস্সমূলে নিসিন্নোব,সব্বারি বিজযং অকা। পত্তো সব্বঞঞূতং সত্থা বন্দেতং বোধিপাদপং। ইমেহে তে মহাবোধি লোকনাথেন পূজিতং ।অহম্পিতে নমস্সামি বোধিরাজা নমত্থুতে।

মোর-পরিত্তং - উদেতযং চক্খ্মা একরাজা, হরিস্সবন্নো পঠবিপ্পভাসো। তং তং নমস্সামি হরিস্সবণ্ণং পঠবিপ্পভাসং, তাযজ্জগুত্তা বিহরেমু দিবসং ।। যে ব্রহ্মণা বেদগূ সব্ বধম্মে, তে মে নমো, তে চ মং পালযন্ত। নমন্থু বুদ্ধানং, নমন্থু বোধিযা, নমো বিমুত্তানং, নমো বিমুত্তিযা ।ইমং সো পরিত্তং কত্বা মোরো  চরতি এসনা। অপেতযং চক্খ্মা একরাজা, হরিস্সবন্নো পঠবিপ্পভাসো। তং তং নমস্সামি হরিস্সবণ্ণং পঠবিপ্পভাসং, তাযজ্জগুত্তা বিহরেমু রত্তিং যে ব্রহ্মণা বেদগূ সব্ বধম্মে, তে মে নমো, তে চ মং পালযন্ত। নমন্থু বুদ্ধানং, নমন্থু বোধিযা, নমো বিমুত্তানং, নমো বিমুত্তিযা । ইমং সো পরিত্তং কত্বা মোরো বাসম কপ্পয়িতি।

শক্তিশালী সম্বুদ্ধে গাথা ‘‘সম্বুদ্ধে অট্ঠৰীসঞ্চ,দ্ৰাদসঞ্চ সহস্সকে।পঞ্চসত সহস্সানি,নমামি সিরসামহং।

অপ্পকা বালুকা গঙ্গা; অনন্তা নিব্বুতা জিনা, তেসং ধম্মঞ্চ সঙ্ঘঞ্চ, আদরেন নমামহং॥

নমক্কারানুভাৰেন, হিত্বা সব্বে উপদ্দৰে। অনেক অন্তরাযাপি, ৰিনস্সন্তু অসেসতো॥

সিরস্মীং গাথা বুদ্ধ বন্দনা - সিরস্মীং মে বুদ্ধ সেটঠো, সারিপুত্তো চ দকখিণে, বাম অংসে মোগগলানো

পুরতো পিটকত্তয়ং। পচ্ছিমে মম আনন্দো, চতুদ্দিসা খীণাসবা,সমন্তা লোকপালা চ,ইন্দা দেবা সব্রহ্মকা।

এতেসং আনুভাবেন, সব্বে ভায়া উপদ্দবা, অনেক অন্তরায়াপি, বিনাসসন্তু অসেসতো।  

ত্রিশরণ গাথা

বুদ্ধের শরণাগত নরকে না যায় ; নরলোক পরিহরি দেবলোক পায় । ধর্মের শরণাগত নরকে না যায় ; নরলোক পরিহরি দেবলোক পায়।

সঙ্ঘের শরণাগত নরকে না যায় ; নরলোক পরিহরি দেবলোক পায়। ভূধর, কন্দর কিংবা জনহীন বন, শান্তি -হেতু লয় লোক সহস্র শরণ।

ত্রিরত্ন - শরণ কিন্তু সর্বদুঃখহর ; লভিতে ইহারে সদা হও অগ্রসর ।


ক্ষমা প্রার্থনা গাথা 

ত্রিরত্ন কাছে কায়-বাক্য-মনে যাহা ভ্রমে করিয়াছি পাপ ক্ষমা প্রভু তাহা॥ নিত্য দিনে কৃতঞ্জলি কর্ম্মের প্রভাবে, অন্তরে বাহিরে রোগ ছিয়ান্নব্বই ভবে।

বত্রিশ কায়িক শাস্তি ভয় পঞ্চ বিংশ, উপদ্রব ষোল, দশ দণ্ড ,অষ্ট দোষ। পঞ্চ বৈরী,চতুর অপায়,কল্পত্রয়,এসব নিঃশেষরূপে যেন নষ্ট হয়।

মানসের আশা মম পুরুন সত্ত্বরে, দীর্ঘ আয়ু হয় যেন জন্ম-জন্মান্তরে।জন্ম-জন্মান্তরে যেন লভি সর্ব্ব সুখ,অচিরে লভিয়া মার্গ নাশি সর্ব্ব দুঃখ ॥


- প্রার্থনা স্তোত্র- 

দুর্নিমিত অমংগল পাখীর কুরব, দুঃস্বপ্নাদি পাপগ্রহ অপ্রিয় যে সব।

অমনোজ্ঞ বিষয়াদি যত আছে ভবে,ত্রিরত্ন প্রভাবে তাহা নষ্ট হোক সবে।

সুখী হোক প্রাণীসব যাহারা দুঃখিত, ভীত প্রাণী নির্ভয়েতে থাকুক সতত।

 মম এই কুশলের প্রভাবে নিশ্চয়, শিক্ষা-গুরু দীক্ষা-গুরু আর ত প্রিয়,

মাতা-পিতা-চন্দ্র-সূর্য গুণবান যত, ব্রহ্ম-মার-লোকপাল-দেবেন্দ্র সতত।

 সম মিত্র মধ্যস্থ ও শত্রু নরগণ, সুখী হোক মৈত্রী চিত্ত ভাবি অনুক্ষণ।

মম কৃত পুণ্য-কর্মে দেব-মোক্ষ-নর, এ তিন সম্পদ লাভ হোক নিরন্তর।

এই পুণ্য কর্ম আর ধর্ম শিক্ষা-গুণে, উপাদান তৃষ্ণা আর কলুষ প্রসূনে,

হীন চিত্ত-ভাব যাহা বিহরে মানসে,সত্বর সহজে তাহা যাউক বিনাশে।

যাবৎ নির্বান ধন লাভ নাহি করি, তাবৎ বিপদ যত যায় যেন হরি।

 উজুচিত্ত স্মৃতিবান জ্ঞানী ধ্যানী আর, বীর্য্যবান হই সদা জিনি দুষ্ট মার।

মার যেন মম চিত্তে নাহি পায় স্থান, অবসাদ ত্যজি ইহা করি প্রণিধান।

বুদ্ধ ধর্ম সঙ্ঘ আর পচ্চেক সম্বুদ্ধ, তাঁহারা আমার নাথ নির্বাণ-প্রবুদ্ধ।

এ উত্তম সম্বুদ্ধের তেজে মার মম, অনিষ্ট সাধিতে কভু না হোক্ সক্ষ

উর্দ্ধে অকনিষ্ঠ আদি ব্রহ্ম লোক আর, নীচেতে অবীচি অন্ত সংসার মাঝার।

রূপী ও অরূপী আর সংজ্ঞী ও অসংজ্ঞী, যত প্রাণী আছে তবে অঙ্গী বা অনঙ্গী।

সবে দুঃখ মুক্ত হয়ে লভুক নির্বাণ, সুখী হোক সর্ব সত্ত্ব করি প্রণিধান।

যথাকালে মেঘে বারি করুক বর্ষণ, ধরণী ফসলে পূর্ণ হোক সর্বক্ষণ।

সতত সম্পদে পূর্ণা হোক বসুন্ধরা, রাজগণ ধর্মপ্রাণ হোক পরম্পরা।

জল-স্থল-খগবাসী ঋদ্ধিবান যত, দেব-নাগ-যক্ষ আদি বিহরে সতত।

অনুমোদি তারা সবে এই পুণ্যধন, বুদ্ধের দেশনা আর সুন্দর শাসন।

আমাকে ও অপরকে চিরকাল ধরে, আপদ বিপদ হতে যেন রক্ষা করে॥

প্রার্থনা -হে মহাকারুনিক সম্যকসম্বুদ্ধ আমাকে আশীর্বাদ করুন, আমি যেন রোগ-শোক, দুঃখ-অন্তরায় দূর করতে পারি। আমার সাথে যাতে সৎ এবং  জ্ঞানী লোকের সাথে দেখা হয়। পাপী ও অজ্ঞানী্র সাথে দেখা না হয়মি যেন আমার পরিবারকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দান করতে পারি। আমি যেন বৌদ্ধ ধর্মীয় আদর্শ ভিত্তিক পরিবার এবং  সমাজ গঠন করতে পারি। আমার বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয় স্বজন এবং বৌদ্ধ জাতিকে তুমি সকল বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করো। আজকের এই বন্দনাজনিত পুণ্যরাশি আমার পরলোকগত মা এবং জ্ঞাতীদেরকে দান করছি। পরিশেষে বুদ্ধ শাসনের শ্রীবৃদ্ধি হউক এবং আমার এই প্রার্থনার প্রভাবে আমি যেন স্রোতাপত্তি ফলে প্রতিষ্ঠিত হয়ে অন্তিমে নির্বাণ লাভ করতে পারি। হে ভগবান,আমার এই মনোবাসনা পূর্ণ করো ।  সাধু, সাধু, সাধু!  🙏  🙏  🙏

প্রার্থনা স্তোত্র

- প্রার্থনা স্তোত্র-

দুর্নিমিত অমংগল পাখীর কুরব, দুঃস্বপ্নাদি পাপগ্রহ অপ্রিয় যে সব।

অমনোজ্ঞ বিষয়াদি যত আছে ভবে,ত্রিরত্ন প্রভাবে তাহা নষ্ট হোক সবে।

সুখী হোক প্রাণীসব যাহারা দুঃখিত, ভীত প্রাণী নির্ভয়েতে থাকুক সতত।

 মম এই কুশলের প্রভাবে নিশ্চয়, শিক্ষা-গুরু দীক্ষা-গুরু আর ত প্রিয়,

মাতা-পিতা-চন্দ্র-সূর্য গুণবান যত, ব্রহ্ম-মার-লোকপাল-দেবেন্দ্র সতত।

 সম মিত্র মধ্যস্থ ও শত্রু নরগণ, সুখী হোক মৈত্রী চিত্ত ভাবি অনুক্ষণ।

মম কৃত পুণ্য-কর্মে দেব-মোক্ষ-নর, এ তিন সম্পদ লাভ হোক নিরন্তর।

এই পুণ্য কর্ম আর ধর্ম শিক্ষা-গুণে, উপাদান তৃষ্ণা আর কলুষ প্রসূনে,

হীন চিত্ত-ভাব যাহা বিহরে মানসে,সত্বর সহজে তাহা যাউক বিনাশে।

যাবৎ নির্বান ধন লাভ নাহি করি, তাবৎ বিপদ যত যায় যেন হরি।

 উজুচিত্ত স্মৃতিবান জ্ঞানী ধ্যানী আর, বীর্য্যবান হই সদা জিনি দুষ্ট মার।

মার যেন মম চিত্তে নাহি পায় স্থান, অবসাদ ত্যজি ইহা করি প্রণিধান।

বৃদ্ধ ধর্ম সঙ্ঘ আর পচ্চেক সম্বুদ্ধ, তাঁহারা আমার নাথ নির্বাণ-প্রবুদ্ধ।

এ উত্তম সম্বুদ্ধের তেজে মার মম, অনিষ্ট সাধিতে কভু না হোক্ সক্ষ

উর্দ্ধে অকনিষ্ঠ আদি ব্রহ্ম লোক আর, নীচেতে অবীচি অন্ত সংসার মাঝার।

রূপী ও অরূপী আর সংজ্ঞী ও অসংজ্ঞী, যত প্রাণী আছে তবে অঙ্গী বা অনঙ্গী।

সবে দুঃখ মুক্ত হয়ে লভুক নির্বাণ, সুখী হোক সর্ব সত্ত্ব করি প্রণিধান।

যথাকালে মেঘে বারি করুক বর্ষণ, ধরণী ফসলে পূর্ণ হোক সর্বক্ষণ।

সতত সম্পদে পূর্ণা হোক বসুন্ধরা, রাজগণ ধর্মপ্রাণ হোক পরম্পরা।

জস-স্থল-খগবাসী ঋদ্ধিবান যত, দেব-নাগ-যক্ষ আদি বিহরে সতত।

অনুমোদি তারা সবে এই পুণ্যধন, বুদ্ধের দেশনা আর সুন্দর শাসন।

আমাকে ও অপরকে চিরকাল ধরে, আপদ বিপদ হতে যেন রক্ষা করে॥



ক্ষমা প্রার্থনা গাথা

                                                   ক্ষমা প্রার্থনা গাথা

ত্রিরত্ন কাছে কায়-বাক্য-মনে যাহা ভ্রমে করিয়াছি পাপ ক্ষমা প্রভু তাহা॥
নিত্য দিনে কৃতঞ্জলি কর্ম্মের প্রভাবে, অন্তরে বাহিরে রোগ ছিয়ান্নব্বই ভবে। বত্রিশ কায়িক শাস্তি ভয় পঞ্চ বিংশ, উপদ্রব ষোল, দশ দণ্ড , অষ্ট দোষ।
পঞ্চ বৈরী, চতুর অপায়, কল্পত্রয়, এসব নিঃশেষরূপে যেন নষ্ট হয়।
মানসের আশা মম পুরুন সত্ত্বরে, দীর্ঘ আয়ু হয় যেন জন্ম-জন্মান্তরে।

জন্ম-জন্মান্তরে যেন লভি সর্ব্ব সুখ, অচিরে লভিয়া মার্গ নাশি সর্ব্ব দুঃখ॥


ক্ষমা প্রার্থনার উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তা
প্রথমে বুদ্ধের সমসাময়িক একটি গল্প দিয়ে লেখাটি শুরু করা যাক। বেণুবন বিহারে বুদ্ধ অবস্থান করার সময় ভরদ্বাজ নামে এক ব্রাহ্মণ বাস করতেন। ব্রাহ্মণ শুনেছেন তার একজন নিকটাত্মীয় বুদ্ধের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছে। এতে ক্ষুব্ধ চিত্তে বেণুবনে উপস্থিত হয়ে বুদ্ধকে বাক্যবাণে, অশালীন ভাষায় গালাগালি করেন। বুদ্ধ নিরবে থাকলেন। ভরদ্বাজ যখন শান্ত হলেন তখন বুদ্ধ তাকে বললেন, হে ভরদ্বাজ, যদি তুমি তোমার আত্মীয়কে কিছু জিনিস দিতে চাও, সে যদি গ্রহণ না করে জিনিসটি কার থাকবে? ভরদ্বাজ বললেন, সেটি আমার কাছে থাকবে। বুদ্ধ বললেন, দেখুন, তুমি যে এতক্ষণ আমাকে আক্রোশ চিত্তে অশালীন, গালাগালি করেছ, তা যদি আমি গ্রহণ না করি তবে কার কাছে থাকবে? তা’তে ভরদ্বাজ ব্রাহ্মণ লজ্জিত হন। এতে নিজের ক্লেশ ও অপবাদ অন্তরায়ের কথা বুঝতে পেরে বুদ্ধের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
বৌদ্ধদেশ মিয়ানমার (তৎকালীন বার্মা) বৌদ্ধ উপাসক-উপাসিকারা পঞ্চশীল বা অষ্টশীল গ্রহণের পূর্বে ভিক্ষু বা ভিক্ষুসংঘের কাছে কায়-মনো-বাক্য ক্ষমা প্রার্থনা করতেন। বাংলায়ও বৌদ্ধদের এই রীতি দেখা যায়। আমরা জানি বোধিসত্ত্ব সুমেধ তাপস জন্মে, দীপঙ্কর সম্যক সম্বুদ্ধের দর্শন লাভ করেছিলেন। দীপঙ্কর বুদ্ধ ধর্মাভিযানে সশিষ্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে একটি কর্দমাক্ত রাস্তা ছিল। সেই কর্দমাক্ত রাস্তায় শুয়ে তার ওপর দিয়ে বুদ্ধকে পার হতে অনুরোধ করেছিলেন। এবং তাপস বুদ্ধের কাছে সম্যক সম্বুদ্ধ হবার সংকল্প বা প্রার্থনা করেন। তখন বুদ্ধ তাপসের কোন এক জন্মে বুদ্ধত্ব লাভ করার সুপ্ত প্রতিভা বা লক্ষ্মণ দেখতে পেয়ে আর্শীবাদ প্রদান করেন। এভাবে সংকল্প বা প্রার্থনার আগে অবশ্যই সুকর্ম, পুণ্যকর্ম, কুশলধর্ম সম্পাদন করতে হবে। তবেই প্রার্থনা সিদ্ধি হয়। বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি আকাশে তীর নিক্ষেপ করলে সেই তীর আড়াআড়ি, উর্ধ্ব নাকি অধোদিকে পতিত হবে সুনিশ্চিত নয় তেমনি পুণ্যকামীদের সুকর্মের মধ্যদিয়ে প্রার্থনা অধিষ্ঠান করে ঠিক করে নিতে হয়। ক্ষমাশীলতা একটি মহৎ গুণ। বর্ণিত হয়েছে দ্বেষের সমান পাপ নেই, ক্ষমার সমান তপস্যা নেই। তাই পরম যত্নে ক্ষমা অনুশীলন করা উচিত।
“তিরতনেসু কাযেন, বাচায, মনসাপি চ, পমাদেন কতং ভন্তে সব্বদোসং খমন্তু মে।
তেসু কতঞ্জলি কম্মস্সানু ভাবেন সব্বদা, অজ্ঝত্তিকা চ বহিদ্ধা রোগা ছন্নবুতিবিধা।
বত্তিংস কম্ম করণা পঞ্চবীসতি ভেরবা, সোলসূপদ্দবা চাপি দ-ং দোসো দসট্ঠ চ।
পঞ্চ বেরানি চত্তারো অপাযা চ তযোপি চ, কপ্পা চ ইতি সব্বেতে বিনস্সন্তু অসেসতো।
ইচ্ছিতং পত্থিতং চাপি খিপ্পমেব সমিজ্ঝতু, দীঘং চ হোতু মে আযু সংসারে সব্বজাতিসু।
সংসারে সংসারন্তো চ লভিত্বা লোকিযং সুখং, ন চিরং মগ্গং লদ্ধান নিব্বানং পাপুনিস্সাহং।”
বাংলারূপ: ভন্তে, কায়-বাক্য ও মনো দ্বারা ভূল বা প্রমাদবশত: আমার কৃত অপরাধ ক্ষমা করুন। সর্বদা ত্রিরত্নের প্রতি কৃত অঞ্জলি কর্ম পুণ্যের প্রভাবে আমার ভেতর ও বাহিরে ছিয়ানব্বই প্রকার রোগ, বত্রিশ প্রকার কায়িক শাস্তি, পঁচিশ প্রকার ভয়, ষোল প্রকার উপদ্রব, দশ দণ্ড, অষ্টদোষ, পঞ্চবৈরী বা শত্রু, চারি অপায়, তিনকল্প-এসব যেন শীঘ্রই বিনষ্ট হয়। আমার ইচ্ছিত প্রার্থনা, কামনা শীঘ্রই পরিপূর্ণ হোক, সংসারে সকল জন্মে আয়ু দীর্ঘ হোক। জন্ম জন্মান্তরে আমার সর্বসুখ লাভ হোক এবং অচিরে আমার সর্ব পাপরাশি বিনাশ প্রাপ্ত হয়ে নির্বাণ লাভ হোক।
ত্রিরত্ন: ত্রি-রত্ন বলতে তিনরত্নের সমাহার। বুদ্ধরত্ন, ধর্মরত্ন ও সংঘরত্ন। বুদ্ধের গুণ বর্ণনাতীত। তিনি অনন্ত গুণের অধিকারী। ধর্মগুণ অপরিসীম। এটি নির্বাণপ্রদায়ী ধম্ম। সংঘগুণ অনন্ত। মানুষের শরীরে ৯৬ প্রকারের রোগ (খুদ্দক নিকায় মহানির্দেশ অনুসারে) বিদ্যমান।
ছিয়ানব্বই প্রকারের রোগ: সিদ্ধার্থ নগর ভ্রমণে চারটি নিমিত্ত দর্শন করেন। তারমধ্যে অন্যতম ছিল রোগে কাতর এর বৃদ্ধ। পরবর্তীতে বুদ্ধত্ব অর্জন করে এক মহাসত্য আবিষ্কার করেন। বুদ্ধ তথাগত সত্ত্বগণের বারবার পৃথিবীতে জন্ম পরিগ্রহ ও এর রহস্য উদঘাটনে চারি আর্যসত্য ও আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ আবিষ্কার করেন। অষ্টাঙ্গিক মার্গে ব্যাধি বা রোগ দু:খের কথা বলা হয়েছে। মানুষ নানা রোগে জর্জরিত। রোগের যন্ত্রণায় ছটফট করে। কেউ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কাছে ঢলে পড়ে। সেজন্য বুদ্ধ বলেছেন, যতদিন এই পঞ্চস্কন্ধ বিদ্যমান থাকবে ততদিন সত্ত্বগণ রোগের যন্ত্রণায় ভুগবেন। দেখুন নানা রোগের নামসমূহ: ১) চক্ষুরোগ, ২) কর্ণরোগ, ৩) নাসিকা রোগ, ৪) জিহ্বা রোগ, ৫) চর্মরোগ, ৬) শির:রোগ, ৭) বর্হিকর্ণ রোগ, ৮) মুখ রোগ, ৯) দন্তরোগ, ১০) কফ বা কাঁশিরোগ, ১১) দাহ, ১৩) জ্বর, ১৪) উদর বা অজীর্ণ রোগ, ১৫) মুর্চ্ছা, ১৬) ডায়রিয়া, ১৭) শূল, ১৮) ক্ষয়রোগ বা হাঁপানি, ১৯) ওলাউঠা বা কলেরা, ২০) কুষ্ঠ, ২১) বিষফোঁড়া, ২২) ক্ষুদ্র ফোঁড়া, ২৩) শ্বেত কুষ্ঠ, ২৪) দাদ(চর্মরোগ জাতীয়), ২৫) চুলকানি, ২৬) ক্ষুদ্র ফোঁড়া, ২৭) নখ দ্বারা আঁচরিত স্থানে জল নির্গত রোগ, ২৮) রক্ত-পিত্ত, ২৯) ডায়বেটিস, ৩০) অর্শ, ৩১) ব্রণ ও ৩২) ভগন্দর(মলদ্বারে একধরণের বিষফোড়া জাতীয় রোগ)। এই সমস্ত রোগগুলি পিত্তসমুট্ঠানা বা পিত্ত্ সমস্যাজনিত কারণে ৩২ প্রকার রোগ হয়ে থাকে। সেমহসমুট্ঠানা বা উক্ত রোগ শ্লেষ্মা সমস্যাজনিত কারণেও হয়ে তাকে। আবার বাত সমুট্ঠানা বা বাতরোগজনিত কারণেও হয়ে থাকে। এভাবে ছিয়ানব্বই প্রকার রোগ পাওয়া যায়।
বত্রিশ প্রকার কায়িক শাস্তি: অসৎ, দুশ্চরিত্র, পাপাচারী, দুর্বত্ত, চোর-ডাকাত, সন্ত্রাসীদের অপকর্মের শাস্তি হিসেবে নানা শান্তি বিধান করা হয়েছে। তাদেরকে বিভিন্নভাবে নারকীয় কায়দায় শাস্তি প্রদান করা হয়। এখানে ৩২প্রকার কায়িক শাস্তি উল্লেক রয়েছে তা নিম্নরূপ- ১) বেত্রাঘাত, ২) দণ্ডাঘাত, ৩) খণ্ডিত রড দ্বারা আঘাত, ৪) হাত কেটে ফেলা, ৫) পাদযুগল কেটে ফেলা, ৬) হাত-পা কেটে ফেলা, ৭) নাক কেটে ফেলা, ৮) কর্ণ ছিন্ন করা, ৯) নাক-কান ছিন্ন করা, ১০) মাথার উপর থেকে গরম যাগু ঢেলে তালু পুড়িয়ে দেয়া, ১১) মাথায় ঘষে সমস্ত চুল উপড়ে ফেলা, ১২) মুখে উত্তপ্ত লৌহ শলাকা ঢুকিয়ে দেয়া, ১৩) শরীরে বস্ত্রাচ্ছাদিত করে তৈল ঢেলে আগুন দেয়া, ১৪) তৈল যুক্ত বস্ত্রাচ্ছাদিত হস্তে আগুন দেয়া, ১৫) শরীরে গলা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত দাগ কাটা, ১৬) গলা থেকে নীচের দিকে চাকমা খূলে চুলের সাথে বেঁধে দেয়া, ১৭) হাত-পায়ের সাথে বেঁধে উত্তপ্ত লৌহ পোতের দিকে ধাবিত করা, ১৮) লৌহ শলাকার উপর ঝুঁলিয়ে রাখা, ১৯) শরীরে মাংস কেটে তাম্র মুদ্রার সদৃশ গোল আকৃতি করা, ২০) সমস্ত শরীর ছুরি দ্বারা কেটে তাতে লবণ মেখে যন্ত্রণাবিদ্ধ করা, ২১) শরীরে গোল গোল তরে ফোঁড় দেয়া, ২২) দণ্ডাঘাতে মেরে পিটে মাংস পিণ্ডবৎ ফেলে রাখা, ২৩) উত্তপ্ত তৈলে সিদ্ধ করা, ২৪) কুকুরকে কামড়াতে দেয়া, ২৫) শূলে দেয়া, ২৬) খড়গ দ্বারা মাথা ছিন্ন করা, ২৭) হাতে উত্তপ্ত লৌহ গোলক দেয়া, ২৮) দ্বিতীয় হস্তেও উত্তপ্ত লৌহ গোলক রাখতে দেয়া, ২৯) পায়ে উত্তপ্ত লৌহ গোলক রাখতে দেয়া, ৩০) দ্বিতীয় পায়েও উত্তপ্ত লৌহ গোলক রাখতে দেয়া, ৩১) বুকে উত্তপ্ত লৌহ গোলক রাখতে দেয়া, ৩২) নিরয়পাল কুঠার দ্বারা দেহ খণ্ড-বিখণ্ড করা।
পঁচিশ প্রকার ভয়: মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে নানা স্থানে বিচরণ করে । কিন্তু জীবিকার তাগিদে পৃথিবী নামক গ্রহে বিভিন্ন পথে প্রান্তরে ঘুরতে হয়। কখনো পানিপথে, শ্বাপদসংকুল পথে, কখনো আকাশে, গহীন অরণ্যে ইত্যাদি ইত্যাদি। এই বিচরণে মানুষের অন্তরাত্মায় একটা ভয়-ভীতি কাজ করে। এখানে পঁচিশ প্রকার ভয়-ভীতির কথা উল্লেখ রয়েছে যা নিম্নরূপ: ১) জ্ঞাতি বিনাশজনিত ভয়, ২) রোগ ভয়, ৩) সম্পদ হারানোর ভয়, ৪) চরিত্র হারানোর ভয়, ৫) সম্যক দৃষ্টি হারানোর ভয়, ৬) জন্মজনিত ভয়, ৭) বৃদ্ধত্বের ভয়, ৮) মৃত্যুভয়, ৯) রাজভয়, ১০) চোরের ভয়, ১১) অগ্নি ভয়, ১২) জল ভয়, ১৩) অসুস্থতার ভয়, ১৪) নিজেকে নিন্দার ভয়, ১৫) পরকে নিন্দার ভয়, ১৬) দণ্ডাঘাত ভয়, ১৭) দুর্গতি বা দুর্ভাগ্য ভয়, ১৮) উর্মি বা ঢেউয়ের ভয়, ১৯) কুমীরের ভয়, ২০) ঝড়ের ভয়, ২১) এলিগেটর বা কুমীর জাতীয় প্রাণী ভয়, ২২) জীবিকা ভয়, ২৩) দুর্নামের ভয়, ২৪) পরিষদের ভীরুতা ভয় ও ২৫) মদ-মত্ততার ভয়।
ষোল প্রকার উপদ্রব: মানুষ বিভিন্ন উপদ্রবে অতিষ্ট। ১) দোষে অভিযুক্ত, ২) চেইন দ্বারা বন্ধন, ৩) রসি দ্বারা বন্ধন, ৪) হাতকড়া দ্বারা বন্ধন, ৫) বেত্রদ্বারা বন্ধন, ৬) লতাদ্বারা বন্ধন, ৭) কারাগারের বন্ধন, ৮) দেয়ালে বন্ধন, ৯) গ্রাম্য বন্ধন, ১০) থানা বন্ধন, ১১) শহর বন্ধন, ১২) রাষ্ট্রের বন্ধন, ১৩) জেলা বন্ধন, ১৪) বাসন্থান পরিবর্তন নিষেধাজ্ঞা, ১৫) ধন-সম্পত্তি বাজেয়াপ্তকরণ, ১৬) দু:খ র্দৌমনস্যজনিত অসুখী।
দশ প্রকার দণ্ড: ১) তীব্র শারীরিক বেদনা, ২) ধনক্ষয়, ৩) পক্ষাঘাতাদি কঠিন ব্যাধি, ৪) অঙ্গচ্ছেদ, ৫) মানসিক বিকৃতি, উন্মাদ, ৬) রাজাপরাধী হওয়া, ৭) চারিত্রিক কলঙ্কের ভাগী, ৮) জ্ঞাতি ক্ষয়, ৯) সম্পদহানী ও ১০) অগ্নিদাহ।
আট প্রকার দোষ বা অক্ষণ: এই সময়কে দোষযুক্ত কাল কলা হয়। দু:সময়। সত্ত্বগণের দু:খমুক্তির অন্তরায়। ১) নরক, ২) তির্যক কুল, ৩) প্রেতলোক, ৪) অসঙ্গ সত্ত্ব, ৫) ইন্দ্রিয় সমূহের অকার্যকারিতা, ৬) প্রত্যন্ত প্রদেশে জন্ম, ৭) অরূপ ব্রহ্মলোকে উৎপত্তি ও ৮) মিথ্যাদৃষ্টি হয়ে জন্ম।
পাঁচ প্রকার শত্রু বা বৈরী:
১) রাজশত্রু (কোন কোন ক্ষেত্রে রাষ্ট্র প্রধান জনগণকে অনিষ্ট করে, জনগণকে অত্যাচার, অবিচার, দু:শাসন চালায়), ২) অগ্নিশত্রু ( অসাবধানতাবশত আগুন নিমিষেই মূল্যবান ধন-সম্পত্তি দগ্ধীভূত করে দেয়) , ৩) বন্যা শত্রু (বন্যায় অনেক ধন-সম্পদ বিনাশ, ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে) , ৪) চোর-ডাকাত শত্রু, ৫) অমিত্র বা অপ্রিয় ব্যক্তি শত্রু।
চারি অপায়: সত্ত্বগণ এই চারি অপায়ে জন্ম নিলে তাদের দু:খের শেষ নেই। দু:খমুক্তি তাদের জন্য সুদূর পরাহুত। সেখানে নেই পুণ্যকর্ম করার সুযোগ। নেই সুকর্ম করার চেতনা। ১) নরক, ২) তির্যক বা পশু-পক্ষী, ৩) প্রেত ও ৪) অসুর ।
তিনকল্প: বৌদ্ধধর্মে অনন্ত সময় বুঝাতে কল্প ধরা হয়। বুদ্ধ উৎপত্তির নিয়ম অনুসারে কল্প দু’প্রকারের হয়। শূণ্যকল্প ও অশূণ্য কল্প। যে কল্পে বুদ্ধগণ উৎপন্ন হন না সেসময়কে বুদ্ধ অনুৎপত্তিকাল বলা হয়। এটিকে শূণ্যকল্প বলা হয়। বর্তমান কল্পকে ভদ্র কল্প বলা হয়। এ কল্পে পাঁচজন বুদ্ধ উৎপন্ন হবেন। এ কল্পে গৌতম বুদ্ধসহ চারজন বুদ্ধ অতীত হয়েছেন। ভবিষ্যতে যে আর্যমিত্র বুদ্ধ উৎপন্ন হবেন; তিনিও এ ভদ্রকল্পে উৎপন্ন হবেন। বিশুদ্ধিমার্গে চার প্রকার কল্পের উল্লেখ পাওয়া যায়। ক) আয়ুকল্প, খ) অন্তরকল্প, গ) অসংখ্যকল্প ও ঘ) মহাকল্প। এই কল্পগুলি একসময় শেষ হয়ে যাবে। অন্তর কল্পকে মিয়ানমারের (বার্মার) অর্হৎ শ্রদ্ধেয় লেডী ছেয়াদ ভন্তে যে ধারণা দিয়েছেন তা এইরূপ - “গঙ্গা নদীর তিন মাইল পর্যন্ত একটি সীমানা নির্ধারণ করে সেই তিন মাইলে যতগুলো বালি আছে তা গুণে বের করতে যতটুকু সময়ের দরকার হবে সেই সময়টুকু অন্তর কল্পের কাছাকাছি সময় বলে ধারণা করতে হবে। তথাপি বালি গণনা শেষ হবে কিন্তু,অন্তর কল্পের আয়ু শেষ হবে না ” এই অন্তর কল্প শেষ হয় তিনটি কারণে তা নিম্নরূপ: ১) দুর্ভিক্ষ কল্প, ২) যুদ্ধ কল্প ও ৩) মহামারী কল্প। খাদ্য অভাবে মানুষ না খেয়ে মারা যাবে-এসময়কে দুর্ভিক্ষ কল্প বলা হয়। একে অপরের মারামারিতে বহু মানুষ মরে যাবে-এ সময়কে যুদ্ধ কল্প বলা হয়। এবং মানুষ কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষের প্রাণ ক্ষতি হবে বা মারা যাবে-এ সময়কে মহামারী কল্প বলা হয়।
মানুষ সুখে থাকতে চাই। কিন্তু জাগতিক নিয়মে জীবনপ্রবাহে নানা প্রতিকূলতা, রোগ-শোক, দু:খ-বেদনা, বিপত্তি-উপদ্রব, দুর্যোগ, শত্রু-মিত্রের সম্মুখীন হতে হয়। এগুলি যারা অতিক্রম করেছে তারা সফল হয়েছেন। জগতকে আলোকিত করেছেন। জানা-অজানায় অপরাধ হয়ে থাকে বিধায় পারস্পরিক ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।
প্রবন্ধকার: ভিক্খু বিপস্সি, শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহার, মিরপুর-ঢাকা।
তথ্য সংগ্রহ:
ক) বুদ্ধ বন্দনা ও সাধনা পদ্ধতি- ড, বরসম্বোধি ভিক্ষু,
খ) দশ পারমী ও চরিয়া পিটক- ডা সীতাংশ বিকাশ বড়ুয়া