শিশুদের প্রাথমিক বৌদ্ধ ধর্ম শিক্ষা বই (প্লে, নার্সারী, কেজি, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য) রচনা এবং সংকলনে - রূপক কুমার বড়ুয়া,
শিশুদের প্রাথমিক বৌদ্ধ ধর্ম শিক্ষা বই by রূপক কুমার বড়ুয়া pdf
আজকের শিশুই আগামী দিনে জাতিকে নেতৃত্ব দেবে
বৌদ্ধ ধর্মীয় শিক্ষার আলোকে শিশুকালে চরিত্র গঠনে উন্নতি না করতে পারলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সর্বত্রই। কারণ আজকের শিশুই আগামী দিনে জাতি ও দেশকে নেতৃত্ব দেবে, এগিয়ে নিয়ে যাবে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায়। কিন্তু যদি কোন শিশু শিক্ষা জীবনের শুরুতে সঠিক দিক-নির্দেশনা না পায়, তাহলে এর জন্য খেসারত দিতে হয় পুরো জাতিকেই। তাই আগামীর সুস্থ, সুন্দর ও সক্ষম জাতি গঠনের জন্য এ বিষয়ের প্রতি আমাদের সকলেরই সচেতন হওয়া জরুরি। শিশু বয়সে মানুষ যা শেখে তাই পরবর্তী জীবনে তার পথ চলার পাথেয় হিসেবে কাজ করে। শিশুকালের শিক্ষাই হয় তার সারা জীবনের ভিত্তি। শিশুদের বই নির্বাচনের মাপকাঠি কী হওয়া উচিত তা নির্ধারণ করার দায়িত্ব আমাদের সবার। শিশু বয়সে শিক্ষক হলেন তাদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। শিক্ষক যদি অজান্তে কোনো ভুল করেন বা ছাপানো বইয়ে যদি কোনো ভুল থাকে এবং অন্য কেউ যদি তা শুধরেও দেয়; শিশুরা সেটা মানতে নারাজ। কাজেই শিশুবয়সের বইটি তেমনি হওয়া উচিত। বইটি অবশ্যই হতে হবে শিশুদের মনস্তত্ত্বের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। শিশুর চেতনার ছোট জগৎটি যদি সুষম জ্ঞান-খাদ্যের উপাদানে সুসমৃদ্ধ হয়, তাহলে সেই শিশুর চিন্তা হবে অধিকতর বস্তুনিষ্ঠ, সেই শিশুর মানস জগৎ হবে পৃথিবীর বাস্তবতায় বিকাশমান। এ দেশের হিন্দু ও বৌদ্ধরা দুমুঠো ডাল-ভাত খেয়ে নিজেদের ধর্ম ও সংস্কৃতি রক্ষা করে বেঁচে থাকতে চায়। কিন্তু বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক আগ্রাসনে তা সম্ভব হচ্ছে না এবং আমরা সচেতন নই বিধায় ধর্মান্তরের মতো ঘটনাগুলো ঘটছে প্রতিনিয়ত। আমি বিভিন্ন বাল্যশিক্ষার বই সংগ্রহ করে একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করলাম এবং যা দেখতে পেলাম তার সারমর্ম হচ্ছে - ধর্মীয় অস্তিত্ব রক্ষায় হিন্দু ও বৌদ্ধরা মোটেও প্রস্তুত নয়। উপরন্তু, একটি বিশেষ ধর্মের বাল্যশিক্ষা বইতে পেলাম- মূর্তি কে ঘৃণা করো,,,, ইত্যাদি, ইত্যাদি। সেখানে সব ধর্ম সমান বা অসাম্প্রদায়িকতার কোন ছিটেফোঁটাও নেই। পক্ষান্তরে,বৌদ্ধ ধর্মীয় একটি মাত্র বাল্যশিক্ষা বই পেলাম “বোধিপ্রিয় শিশু শিক্ষা” রচনায়ঃ “ভদন্ত প্রজ্ঞাবংশ মহাথেরো” যা সংখ্যায় খুবই অপ্রতুল। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে যে, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় “প্রথম থেকে একাদশ শ্রেণি” পর্যন্ত বাংলা সহ বিভিন্ন পাঠ্য বিষয়ে একটি বিশেষ ধর্মের গুনগান কৌশলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে হিন্দু-বৌদ্ধ শিক্ষার্থীরা নিজেদের ধর্ম ভুলে পরধর্ম চর্চা তথা পরবর্তীতে ধর্মান্তরের একটি ক্ষেত্র তাদের মনে তৈরি হয়। আর এভাবেই হিন্দু বৌদ্ধদের অস্তিত্ব আজ সংকটের মুখে।সমস্ত আগ্রাসন প্রতিরোধের জন্য আমাদের গঠনমূলক কোনো পরিকল্পনা নেই।অন্তঃকোন্দল ও অদূরদর্শিতা পরিত্যাগ করে ভগবান বুদ্ধের সুমহান আদর্শে এই পৃথিবীকে সুন্দর করার প্রয়াসে আসুন, আমরা সবাই মিলে সদ্ধর্ম রক্ষার জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ হই এবং অবশ্যই বাড়িতে বৌদ্ধ ধর্মীয় গৃহশিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিশুদের বৌদ্ধধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে আমাদের দায়িত্ব পালন করি ।
নিবেদক
রূপক কুমার বড়ুয়া